এলাকাবাসীর হুমকির মুখে খোদ এলাকার জয়ী বিধায়ক
বিধায়ক বনাম সাবেক পঞ্চায়েত সদস্য সহ গ্রামবাসী । নলছর বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়কের বিরুদ্ধেই ফুঁসছে জনগণ। গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে এবার কুর্সি বাচানো মুশকিল হবে বিধায়ক কিশোর বর্মণের। আচমকা পঞ্চায়েত সদস্যদের সদস্যপদ খারিজ কে ঘিরে বিধায়কের দিকে তোপ দেগে বিস্ফোরক নলছর শিব নগর এর গ্রামবাসীরা।
২০১৮ তে গোটা ত্রিপুরার রাজনৈতিক চিত্র পাল্টে যাওয়ার সাথে সাথেই ২১ নলছর বিধানসভা কেন্দ্রে ও ফুটেছিল পদ্ম ফুল। তৎকালে বিধায়ক ছিলেন সুভাষ চন্দ্র দাস। এর পর ২০২৩ এ ঐ এলাকার টিকিট পেয়ে ভোটে কোন মতে জয়ী হন বহিঃ রাজ্যের রাজনীতি বিদ আখ্যা প্রাপ্ত কিশোর বর্মণ। বছর যেতে না যেতেই এবার এই বিধায়কের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে উনার বিধানসভা কেন্দ্রেরই ভোটাররা।
সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও নলছরের শিবনগর পঞ্চায়েতে জয়ী বিজেপি। শপথ গ্রহন পর্বের পর প্রধান ও উপপ্রধান মিলে টানা দু মাস পঞ্চায়েত পরিচালনা ও করেছেন। এরই মধ্যে নির্বাচিত প্রধান এর গ্রহন যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন পঞ্চায়েতের সদস্যরা। অতঃপর পঞ্চায়েতের ৬ জন সদস্য কে নলছর ব্লক কর্তৃক তাদের সদস্য পদ বাতিলের নোটিশ ধরিয়ে দেওয়া হয় আর এর পেছনে সরাসরি বিধায়কের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েত সদস্য সহ গ্রামবাসীরা।
উল্লেখ্য, এই কেন্দ্রে ১৯৮৮ থেকে ২০১৮ এর আগে পর্যন্ত টানা বাম বিধায়ক সুকুমার বর্মণের আধিপত্য ছিল। যা কিছু নলছরে উন্নতি সাধন তা হয়েছে বামেদের হাত ধরেই । এর পর ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত বাম বিধায়ক ছিলেন তপন চন্দ্র দাস। তথাপি আরও সুযোগ সুবিধার প্রত্যাশা নিয়ে ২০১৮ তে পরিবর্তন আনলেও প্রাক্তন বিধায়ক তেমন ছাপ ফেলতে পারেননি নলছরে। এবার কিশোর বর্মণের বিরুদ্ধে ও অভিযোগ বিগত এক বছরে বিধায়ক হবার পরে ও কোনো কাজই করেননি তিনি। শিবনগর এলাকা বাসীর বক্তব্য উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বহুদুরে শিবনগর সহ বিভিন্ন গ্রাম । এছাড়াও কিশোর বর্মণ এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে নলছরের বহু গ্রাম।
এমনটাই যদি চলতে থাকে তবে আগামী নির্বাচনে উনার জয়ী হওয়া মুশকিল হয়ে দাড়াতে পারে, আর এই হুমকি দিয়েছেন সরাসরি গ্রামবাসী এবং পঞ্চায়েত সদস্যরাই।
যাদের কারণে উনি বিধায়ক হয়েছেন তাদের কেই বঞ্চিত করে কি কুর্সি বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন কিশোর বর্মণ ? বহিঃ রাজ্য থেকে রাজনীতির পাঠ নিয়ে সেই টেকনিক কি এই ত্রিপুরার সাধাসিধে মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে কোনো লাভ হল উনার ?
উল্টে জনসাধারণের জনমত হাড়িয়ে এবার বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক দের তালিকায় নিজের নামাঙ্কনের দিকেই হাঁটছেন তিনি। যদিও পঞ্চায়েত সদস্য দের কেন সদস্য পদ বাতিল হয়েছে তা নিয়ে বিধায়ক এবং ব্লক কর্তৃপক্ষ কে যুক্তি সমেত তথ্য তুলে ধরার জন্যে আর্জি জানিয়েছেন তারা। কিন্তু যদি তা না হয় তবে নিশ্চিত রূপে নলছর কেন্দ্র থেকে কিশোর বর্মণের নাম মুছে দিতে দ্বিতীয় বার চিন্তা ভাবনা করবেন না ক্ষুব্ধ নলছর বাসী , এটুকু নিশ্চিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তারা।
বিজেপির এই গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে কি আবারো বামেদের দিকেই ঘুরে দাঁড়াবেন নলছর বাসী ? এই সমস্ত ঘটনায় কি বামেরা কিছুটা বাড়তি মাইলেজ পাচ্ছে নলছরে ? বিভিন্ন আশঙ্কা ঘুরছে জনমনে।