Education department suffering from illness in Tripura
রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর পরিচালনায় চুরান্ত ভাবে ব্যর্থ শিক্ষা মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী। অঙ্গনওয়ারী কর্মীর চুরান্ত গাফিলতি তে লাটে উঠেছে ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের শৈশব কালীন শিক্ষা। নজরদারি নেই শিক্ষা মন্ত্রী কিংবা দপ্তরের আধিকারিকদের। এবার বোধয় নতুন মুখ চাইছে ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর।
রাজ্যে প্রাক প্রাথমিক থেকে উচ্চতর শিক্ষা সর্বত্রই এক রাশ ক্ষোভের ছাপ শিক্ষানুরাগী মহলের। হীরের ত্রিপুরা রাজ্যে উন্নয়নের ছোঁয়া চারিদিকে পৌঁছাবার দাবী করলেও জাতির মেরুদণ্ড অর্থাৎ শিক্ষা ক্ষেত্রই বর্তমানে ত্রিপুরায় সব চাইতে বেশি জরাগ্রস্থ। ক্যান্সার রোগীর চাইতেও বেশি অসুস্থ ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থা। এটা আমরা বলছি না। এই কথাগুলোর সপক্ষে প্রমাণ দিচ্ছেন খোদ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবক মহল।
প্রাক প্রাথমিক স্তরে যেখানে খুদে শিশুদের ভবিষ্যৎ গড়ার প্রথম ধাপ, সেইখানেই দেখা যাচ্ছে গলদ। অঙ্গনওয়ারী সেন্টারের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হচ্ছে চরম অযোগ্য লোক জনদের হাতে। তার প্রমাণ আবারো উঠে এসেছে আগরতলা পশ্চিম প্রতাপগড় স্থিত সুভাষ নগর নবীন পল্লি এলাকা থেকে। নবীন পল্লি এলাকায় একটি মাত্র অঙ্গনওয়ারী সেন্টার রয়েছে। যার সম্পূর্ণ দায়ভার সামলান শর্মিষ্ঠা পাল নামের এক শিক্ষিকা।
এলাকাবাসীর দাবী উনি আজ পর্যন্ত একদিন ও সময় মতো সেন্টারে আসেন নি। সেন্টারে শিশুদের জন্যে যে চাল ডাল, ডিম ইত্যাদি খাবার বরাদ্দ করা থাকে তার কোনো কিছুই পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া হয় না শিশুদের। দীর্ঘ দিন ধরেই উনার বিরুদ্ধে এধরণের অভিযোগ উঠে আসছিল। অবশেষে আজ এলাকাবাসী মিলে অঙ্গনওয়ারী সেন্টারের মধ্যেই উনাকে ঘেরাও করেন এবং সংবাদ মাধ্যমের কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরেন।
এর পর সেন্টারের রান্না ঘরে মজুদ চাল ডালের বস্তা ও ড্রাম ঘেঁটে দেখা যায় রীতিমতো পচন ধরে গেছে সমস্ত খাবার সামগ্রী তে। পচন ধরে পোকা মাকর পর্যন্ত বংশ বিস্তার করছে ডিম এর ভেতরে। বলা যায় গোটা রান্না ঘরের ভেতরে চরম অস্বাস্থকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
আর এই সমস্ত চাক্ষুষ করার পর অভিভাবকদের মধ্যে যেন আরও দ্বিগুণ ক্ষোভ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
এ ঘটনা প্রথম নয়। অঙ্গনওয়ারী সেন্টার গুলোর দিকে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের নজরদারি একেবারে নেই বললেই চলে। যার ফল ভোগ করতে হয় খুদে শিশুদের।
এদিকে এলাকবাসিরা বরাবর দাবী করছেন ঐ দিদিমণি কে হটিয়ে যেন একজন সুযোগ্য ব্যক্তিকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সার্বিক দিক থেকে বলতে গেলে করুন অবস্থায় ধুঁকছে শিক্ষা ব্যবস্থা। শুধু রাজ্য নয়, গোটা দেশ ব্যাপি অসন্তোষ প্রকাশ পাচ্ছে এই একই বিষয় নিয়ে। নয়া শিক্ষানীতি থেকে শুরু করে শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা কিংবা দুর্নীতি সমস্ত কিছু নিয়েই একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য উঠে আসছে।
রাজ্যে একদিকে যেমন প্রাক প্রাথমিক স্তরে চরম অনিয়ম এবং পরিচালনার অভাবে শিশুদের শিক্ষাগত দিক দুর্বল হয়ে পড়ছে তেমনি উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ও নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে খুশি নয় শিক্ষার্থীরা । বলা যায় রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
তবে কি রাজ্যের শিক্ষা দতরের দায়িত্ব এবার অন্য কারো হাতে হস্তান্তর করার সময় এসে গেছে? মুখ্যমন্ত্রি একাই হয়তো এতো গুলো দপ্তর একই সাথে পরিচালনা করতে খানিকটা হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন নিজেই। হয়তো এটাই সময় , একজন সুযোগ্য ব্যক্তি কে শিক্ষা দপ্তরের দায়ভার বুঝিয়ে দেওয়া। যাতে কিছুটা হলেও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় নজরদারি বাড়ানো যায়।