Disaster condition of Golaghati road
“তিপ্রাসাদের উন্নয়ন করবো, তাদের সার্বিক সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দেবো, তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবো” – কথায় বড় , কাজে অষ্টরম্ভা। কারণ বাস্তবে রাজ্যের তিপ্রা মথা শাসিত অঞ্চল গুলিতেই সর্বাধিক দুর্ভোগের শিকার সাধারণ মানুষ। অভিযোগ করছেন ভুক্ত ভোগীরাই।
আজ তিপ্রা মথার জয়ী কেন্দ্র গোলাঘাটি থেকে উঠে এলো অনুন্নয়ন এর এক করুন চিত্র। বিরোধী নয়, বর্তমান শাসক শিবিরের সরিক তিপ্রা মথা দলের বিধায়ক মানব দেববর্মার কেন্দ্র এই গোলাঘাটি। দেখা গেছে, উক্ত বিধানসভা কেন্দ্রের বেশ কিছু প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা আজো পাকা রাস্তার চেহারা অব্দি দেখেনি। আর এই পরিস্থিতি নতুন নয়। দীর্ঘ বাম জামানা তেও একই দশা ছিল। আজো তাই আছে।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর কে জানিয়েও কাজ হয়নি। দেবো দিচ্ছি বলতে বলতে মাসের পর মাস পেড়িয়ে যায়, বছর পেড়িয়ে যায় কিন্তু ভগ্ন রাস্তার সংস্কার আর হয়না। অতঃপর, বর্ষাকালে আবারো এই কর্দমাক্ত রাস্তা ধরেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় তাদের।
জানা গেছে গোলাঘাটি বিধানসভার অন্তর্গত কাঞ্চনমালা এলাকার নকুল চৌমুহনি থেকে খামারপাড়া পর্যন্ত চলাচলের রাস্তাটি দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংস্কারের অভাবে চরম বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। বাম আমল থেকে শুরু করে রাম আমল পর্যন্ত কোনো কালেই এই রাস্তার সংস্কার হয়নি। ভুক্তভোগী স্থানীয় এলাকাবাসীরা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানোর পরেও পি ডব্লিউ ডি এবং গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর রাস্তাটির সংস্কারের জন্যে কোনো প্রকার উদ্যোগ গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যার ফলে রাস্তাটির অবস্থা দিন কে দিন আরও খারাপ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। জানা গেছে নকুল চৌমুহনী থেকে খামারপাড়া পর্যন্ত এই রাস্তার আশেপাশে কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ পরিবারের বসবাস। কাঞ্চন মালা এলাকায় শুধু এই একটি রাস্তা নয়, এমন বেশ কয়েকটি রাস্তা বেহাল অবস্থায় পরিণত হয়ে আছে । অথচ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলি রাস্তা সংস্কারের কোন ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে না। রাস্তাটি সম্পূর্ণ ভাবেই খানাখন্দে পরিণত হয়ে তাতে জল জমাট বেঁধে আছে , আবার কোথাও কোথাও ধান জমির মতো কাদায় পরিণত হয়ে আছে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা মানুষ পায়ে হেঁটে পর্যন্ত এই রাস্তা দিয়ে যেতে পারছে না। রাস্তা সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেও টনক নরেনি সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলির। তাই ভুক্তভোগী এলাকার মানুষ সংশ্লিষ্ট পি ডব্লিউ ডি এবং গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে জানা গেছে খুব শীঘ্রই যদি এই রাস্তার সংস্কার না হয় তাহলে স্থানীয় এলাকাবাসীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। তারা জানিয়েছেন রাস্তার এই সমস্যা নিয়ে তারা অনেকদিন পর্যন্ত ধৈর্য ধরেছেন , এখন স্থানীয় এলাকাবাসীদের সেই ধৈর্যের সীমা ছারিয়ে গেছে। অতএব এবারো সংবাদ প্রকাশের পরেও যদি সংশ্লিষ্টদের টনক না নড়ে তবে এলাকাবাসীরা আন্দোলনে নামতে বাদ্য হবে।
ডবল ইঞ্জিন এর হীরা যুগে এখনো ত্রিপুরার এই প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে রাস্তার সমস্যা সত্যিই অবিশ্যাস্য ঘটনা। উপরন্তু যেখানে বিজেপির সাথে জোট হয়ে রাজ্যের তিপ্রাসাদের জন্যে ব্যাপক উন্নয়ন ছড়িয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তিপ্রা মথা, সেখানে এদের জয়ী কেন্দ্র থেকেই উঠে আসছে অনুন্নয়নের ছবি। এমনটা চলতে থাকলে রাজ্যে সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে মথার ভবিষ্যৎ ও । তাতে সন্দেহ নেই।