BJP sitting MP joining Congress : বিজেপির দিকে তোপ, অহংকার ভেঙ্গে দিতে কংগ্রেসে শামিল বিজেপি সাংসদ অজয় নিষাদ
কংগ্রেস শিবিরে যেন “মেঘ না চাইতেই জল” কিছুটা এমন অবস্থা। লোকসভার ঠিক প্রাক মুহূর্তে পদ্ম ছেড়ে হাত চিহ্ন কে বেছে নিচ্ছেন বহু তাবড় তাবড় নেতা। তবে এবার বিজেপির একজন সিটিং এমপি দল ছেড়ে যোগ দিলেন কংগ্রেসে। বিহারের মুজাফফরপুর থেকে ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী রূপে বিহারের ভিআইপি পার্টির প্রার্থী কে ৪ লক্ষ ৯৯৮৮ ভোটে পরাজিত করে জয়লাভ করেছিলেন সাংসদ অজয় নিষাদ।
কিন্তু ২০২৪ এর নির্বাচনে টিকিট কেটে দেওয়া হল নিষাদের। আর সেই টিকিট দিয়ে দেওয়া হয়েছে ২০১৯ এ অজয় নিষাদের বিপরীতে থাকা ভিআইপি পার্টির তৎকালীন প্রার্থী ডঃ রাজভুষণ চৌধুরী কে।
টিকিট না পেয়েই কি ছাড়লেন বিজেপি অজয় নিষাদ?
ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক ছবি কিছুটা তেমনি। এতে কোনো আশ্চর্য নেই। টিকিট না পাবার ফলে আগেও কংগ্রেস কিংবা অন্যান্য আঞ্চলিক দল ছেড়ে বহু নেতা নেতৃত্ব অন্য দলে ভীরে গিয়েছেন। টিকিট পেয়েছেন, ভোটে লড়াই করেছেন। অজয় নিষাদের ক্ষেত্রে ও কারণ টা কিছুটা এমনই।
মঙ্গলবার জাতীয় কংগ্রেসে অজয় নিষাদ কে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। একটি সাংবাদিক সন্মেলনে কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতৃত্ব দের সঙ্গে অজয় নিষাদ ও উপস্থিত ছিলেন। সেখানে সাংবাদিক দের প্রশ্নের জবাবে নিষাদ বিজেপি ছাড়ার কারণ নিয়ে অকপটে সমস্তটা স্বীকার করেন অজয় নিষাদ। উনার পিতা ও একটা সময় বিজেপির তানাশাহি ভাবমূর্তির প্রতিবাদ করেছিলেন। তিনি নিজে বিজেপি দলে থাকাকালীন ও বহু অন্যায় অবিচার মুখ বুজে সহ্য করেছেন। কিন্তু ২০২৪ এর নির্বাচনে উনার সাংসদের টিকিট কেটে ভিআইপি পার্টি ছেড়ে সদ্য বিজেপি তে যুক্ত হওয়া ডঃ রাজভূষণ কে টিকিট দেওয়ার বিষয়ে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবে উনার অজান্তে ঘটেছে। সংবাদ মাধ্যম কর্তৃক তিনি জানতে পারেন যে উনার টিকিট অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এদিন বলেন, “কাউকে ফাঁসি দেবার আগেও তার শেষ ইচ্ছে জিজ্ঞেস করা হয়, কিন্তু আমার টিকিট কাঁটার আগে দল আমাকে একবার ও কিছু জানায়নি। এই বিষয়ে জানতে চাইলে দলের বরিষ্ঠ নেতৃত্বদের দাবী যে ৪ লক্ষ ভোট নিয়ে আমি ২০১৯ এ জয়লাভ করেছি সেটাও আমার নয়, উপর ওয়ালার ভোট। এতো অহংকার কোনো রাজনৈতিক দলের জন্যে ভালো নয়। তাদের অহংকার ভাঙতে চাই। তাই কংগ্রেস দলে যুক্ত হয়ে দল কে আগামী দিনে শক্তিশালী করার জন্যে কাজ করবো।“
সাংবাদিক দের আরও এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন , “কংগ্রেস দল থেকে মুজাফফর পুর এর জন্যে আমায় সাংসদের টিকিট দেওয়া হবে কি না সেটা সম্পূর্ণ ভাবে দল নির্ধারণ করবে। এই বিষয়ে আমি দলের সিদ্ধান্ত কে মান্যতা দেবো।“
উল্লেখ্য, টিকিট না পাওয়ার রাগ কিংবা ক্ষোভ নিয়ে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে শামিল হবার আগে সোমবার তিনি কংগ্রেস নেতৃত্ব রাহুল গান্ধী জীর সাথে দেখা করেন। সেখানেই রাহুল গান্ধী জীর সাথে উনার কংগ্রেসে জয়েন করার বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে কংগ্রেস এর হয়ে টিকিট পাবেন কি না সে বিষয়ে কিছু বলেন নি রাহুল গান্ধী।
অবশেষে বলা চলে, নির্বাচনের একেবারে দোরগোড়ায় এসে একে একে বিজেপি দল ছেড়ে বিরোধী ইন্ডিয়া জোট এর দিকে সমর্থকের সংখ্যা ক্রমশই বর্ধমান। যা কোনোভাবেই বিজেপি শিবিরের জন্যে শুভ সংকেত নয়। একদিকে বিরোধীদের এক এক করে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে জেল বন্দী করা হচ্ছে বলে বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। অন্যদিকে দলের আভ্যন্তরীণ গোষ্ঠী কোন্দল ও কিছু কিছু প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে দিয়েছে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কোন দলের কতটা শক্তি সেটা বোঝা খানিকটা মুশকিল। কেননা জনগণ এর রায় শেষ মেশ কোনদিকে যাবে সেটা এখনই অনুমান করা কিছুটা কষ্টকর।