Barnamala Prakashani
এটা শুধুই কথার কথা নয়। প্রকৃতির এই অসামান্য উপাদান কে রক্ষা করা এবং পরিবেশ কে সুস্থ রাখা প্রতিটা মানুষের কর্তব্য। কিন্তু মানুষ নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতে অবাধে বিশাল কায় বন কিংবা বৃক্ষ নিধন করতে এক বিন্দু চিন্তা করেন না আজকাল।
ত্রিপুরা রাজ্যেও সরকারি নির্দেশে উন্নয়নের অজুহাতে হাজার হাজার বন ধ্বংস হয়ে গেছে। এখনো চলছে সেই ধ্বংস লীলা। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে জনগণের জাগ্রুক হওয়া একান্ত প্রয়োজন। আর জনগণ কে সজাগ করে তুলতে এবার স্বেচ্ছায় এক মানবিক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে এলেন রাজধানীর এক প্রসিদ্ধ বই এর প্রকাশনী সংস্থা , বর্ণমালা প্রকাশনী।
বর্ণমালা প্রকাশনীর কর্ণধার চন্দ্রশেখর বসাক বেশ দীর্ঘদিন যাবত রাজ্যের যত্রতত্র অবাধে বহু পুরনো গাছ , বৃক্ষ কেটে ফেলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করে যাচ্ছিলেন। অবশ্য , সরকারি কাজের ক্ষেত্রে বাঁধা দেবার সাধ্য তো কারো নেই। তবে রাজধানীর কিছু জায়গায় ৫০ ঊর্ধ্ব বয়সী বিশালকায় বৃক্ষ গুলো কেটে ফেলার কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে ত্রিপুরার বর্তমান বিজেপি সরকার। আর সেই প্রতিবাদী কণ্ঠের মধ্যেই একটি স্বর ছিল চন্দ্র শেখর বাবুর। সরকারি কাজ বন্ধ করা না গেলেও পরিবেশ রক্ষার্থে স্বউদ্যোগে বৃক্ষ রোপণ তো করা জেতেই পারে। আর সেই চিন্তা ভাবনা কে পাথেয় করেই এবার গোটা ত্রিপুরা রাজ্যে প্রায় ৫০০০ বিভিন্ন মুল্যবান গাছের চারা রোপণ করার উদ্যোগে নিয়েছেন তিনি ও উনার সহকর্মী তথা গোটা বর্ণমালা প্রকাশনী টিম।
বিভিন্ন নার্সারি থেকে ইতিমদ্ধ্যেই বেশ কিছু মুল্যবান ও পরিবেশ বান্ধব গাছের চারা অর্ডার করেছেন তিনি। দিন দুয়েক আগেই উনার বাড়িতে এসে পৌঁছে গেছে ৫৫০ টির ও বেশি চারা। আগরতলা শহরের বেশ কিছু খালি জায়গায় ইতিমধ্যেই ১৫০ টির ও বেশি চারা গাছ রোপণ করেছেন। চারা গাছ গুলোর মধ্যে রয়েছে অর্জুন, দারুচিনি, নিম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জাম, গোলাপ জাম ইত্যাদি গাছ। ১৩ প্রতাপগড় বিধানসভার অন্তর্গত সুভাষনগর এলাকা, ধলেশ্বর চন্দ্রপুর বাঁধের পাড় এর মতো এলাকা গুলি তে খালি জায়গা এবং রাস্তার ধারে এই চারা গাছ গুলি রোপণ করেছে বর্ণমালার উদ্যোক্তারা। আগামী কিছু দিনের মধ্যেই ধীরে ধীরে গোটা রাজ্য ব্যপি ৫০০০ চারা গাছ রোপণের টার্গেট কমপ্লিট করবেন তারা।
উনাদের এই উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানিয়েছে আশ পাশের এলাকার মানুষ জন ও বৃক্ষ রোপণে অংশ গ্রহন করতে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে এসেছেন। স্থানীয় মানুষ জনদের পক্ষ থেকেও ব্যপক সহযোগিতা পাচ্ছেন তারা। এভাবেই যদি মানুষ সহযোগী হয়ে উঠে এবং অবশ্যই পরিবেশ রক্ষার্থে যদি এগিয়ে আসে তবে পরিবেশের এই অমুল্য উপাদান গুলো রক্ষা করা অবশ্যই সম্ভব।
তাছাড়া বর্ণমালা প্রকাশনীর এই উদ্যোগ দেখে অবশ্যই সাধারণ মানুষের মধ্যেও গাছ লাগানোর মানসিকতার বিকাশ ঘটবে। যাতে করে আগামী দিনে এভাবেই আরও বহু মানুষ এগিয়ে এসে খালি জায়গা তে একটি করে হলেও গাছ লাগাবেন।