বৈঠক এর পরেও কি যানজট মুক্ত হল শহর আগরতলা?
গোটা দিন একটা ঘরে এক দল ঘোড়া কে আঁটকে রাখুন। তার পর সন্ধ্যের দিকে ছিটকিনি টা খুলে দিন। হ্যাঁ, আপনার চোখের সামনে একটা চিত্র ভেসে উঠেছে নিশ্চয়ই ? একই চিত্র শহর আগরতলা তেও রোজ সকাল বিকেল চোখে পরে। অফিস আউয়ার গুলোতে এমনিতেই শহরাঞ্চলে যানজট বেশি থাকে। এটা খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তবে অস্বাভাবিক বিষয় হচ্ছে এই যানজট কে নিয়ন্ত্রন করতে কিংবা বলতে পাড়ি পরিচালনা করতে যে পরিমাণ ট্র্যাফিক পুলিশ এর প্রয়োজন ততটা শহরের বেশ কিছু সিগ্ন্যাল পয়েন্টে এখনো দেখা যায়না।
সম্প্রতি দুর্গা পুজোর ঠিক আগ মুহূর্তে রাজধানীর সমস্ত সাংবাদিক দের সাথে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী নিজ সরকারি বাস ভবনে এক সান্ধ্যকালে মত আদান প্রদান সারেন। সেখানে বেশিরভাগই উল্লেখ করেছেন রাজধানীর ট্র্যাফিক ব্যবস্থার দুর্বলতার চিত্র। মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছিলেন , তিনি দেখবেন। অস্বীকার করার বিষয় নয়, তবে তিনি দেখছেন। দু দিন আগেই মহাকরণের ২ নং হলে ট্র্যাফিক দপ্তরের আধিকারিক দের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সারলেন তিনি। রাজ্যের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরো সশক্ত করতেই এই বৈঠক এমনটাও উল্লেখ করেছেন নিজ সামাজিক মাধ্যমে।
এবার এই বৈঠকের মধ্যে কি আলোচনা হল কিংবা কি কি পরিকল্পনা গৃহীত হল তা প্রকাশিত না হলেও ট্র্যাফিক দপ্তর কে টাইট দেওয়া হয়েছে এটুকু নিশ্চিত। কিন্তু , এর প্রভাব কি আদৌ পড়েছে শহরের ট্র্যাফিক সিগন্যাল গুলোতে ?
শহরাঞ্চলের ব্যস্ততম সড়ক , বটতলা থেকে মোটর স্ট্যান্ড, মোটর স্ট্যান্ড থেকে কামান চৌমুহনী, কামান চৌমুহনী থেকে উরিয়েন্ট চৌমুহনী , এইচজিবি রোড , শকুন্তলা মার্কেট এলাকা, উভারসিস মার্কেট এলাকা ইত্যাদি ইত্যাদি , যেখানে অবৈধ পারকিং ও যানজট উভয়ই একটি বিরাট সমস্যা। অবৈধ পারকিং বন্ধ করতে সম্প্রতি অফিস লেন এবং তুলসী বতি স্কুল প্রাঙ্গনের সম্মুখের রাস্তা গুলোতে বিশাল রকমের পরিবর্তন আনতে পারলেও মূল চলাচলের সড়ক গুলো ধুঁকছে জীর্ণতায়।
একদিকে বেড়েছে অস্বাভাবিক যানবাহন এর সংখ্যা। অন্যদিকে কামান চৌমুহনী থেকে উরিয়েন্ট হয়ে সোজা রাজবাড়ী যাবার পথের মাঝখানে যে একটি চৌমাথা বা সিগন্যাল রয়েছে তাতে অবিরাম টিম টিম করছে হলুদ বাতি। নেই ট্র্যাফিক পুলিশ। রেড সিগন্যাল নেই, গ্রিন সিগন্যাল ও বন্ধ। স্বাভাবিক অর্থেই সিগন্যাল বিহীন এই চৌমাথায় যে যার মতো যেদিক থেকে খুশি ঢুকে পড়ছে। বড় সড় সংঘাত হতে হতে ও যেন কোনো মতে প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়ি ফিরছেন যান চালকেরা। এই বিষয় গুলোর দিকে কি নজর দেওয়া হল ?
অন্যদিকে শকুন্তলা মার্কেট থেকে সোজা জগন্নাথ বাড়ি গাড়ি পথেও যে ট্র্যাফিক পয়েন্ট রয়েছে তাতেও একই হাল। টিম টিম জ্বলছে হলুদ বাতি। নেই ট্র্যাফিক পুলিশ।
অন্যদিকে কামান চৌমুহনী থেকে পোস্ট অফিস চৌমুহনী পর্যন্ত অবৈধ পারকিং এর কারণে দুর্বিষহ অবস্থা পথচারী থেকে শুরু করে যান চালকদের ও। অফিস আউয়ার গুলোতে যেহেতু সমস্যা গুলো অনেকটাই বেশি অন্তত পক্ষে এই সময়ে উক্ত এলাকা গুলিতে ট্র্যাফিক দপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ বাবুরা তাদের দায়িত্ব টুকু পালন করতেই পারেন।
মুখ্যমন্ত্রী কিংবা অন্য কোনো মন্ত্রী দের কনভয় পাসিং এর সময় যে কড়া দায়িত্ব পালন করতে মরিয়া হতে দেখা যায় পুলিশ বাবুদের , একই অবস্থা যদি ২৪/৭ থাকে তবেই আর ট্র্যাফিক ব্যবস্থা প্রশ্নের মুখে দাড়ায় না।
এবার দেখার বিষয় হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহা ট্র্যাফিক দপ্তর এর আধিকারিকদের সাথে যে বৈঠক সারলেন তার প্রতিফলন ঘটতে আরও কতটা সময় অপেক্ষা করতে হয়।