খবরে প্রতিবাদ

খবরে প্রতিবাদ

Saturday, 28 June 2025 - 07:41 AM
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫ - ০৭:৪১ পূর্বাহ্ণ

Wife killed by husband in Kailasahar: পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীর কন্ঠনালী কেটে খুন করল স্বামী,পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে স্বামীকে

Wife killed by husband in Kailasahar
1 minute read

Wife killed by husband in Kailasahar

পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছেন স্বামী। ওই ঘটনায় পুলিশের জালে অভিযুক্ত স্বামী। ওই ঘটনা কৈলাসহরের ইরানী থানার অন্তর্ভুক্ত লাটিয়াপুড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জানা গিয়েছে, কৈলাসহরের ইরানী থানার অন্তর্ভুক্ত লাটিয়াপুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চার নং ওয়ার্ডের খিলেরবন্দ এলাকায় গত ১৯ মে ভোর আনুমানিক ৩টে নাগাদ মিসবা বেগম নামের এক গৃহবধুকে গলা কেটে হত্যা করেছিলো তার স্বামী তৌর আলী। খিলেরবন্দ এলাকায় নিজ ঘরে পরকীয়া সন্দেহের জেরে দুই নাবালক সন্তান ঘরে থাকা অবস্থায় তৌর আলি রাতের অন্ধকারে চালায় এই হত্যাকান্ড।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, মিসবা বেগম ও তার স্বামী তৌর আলির মধ্যে ১৮ তারিখ রাত প্রায় ৮টা থেকে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক সময় তা চুড়ান্ত আকার ধারন করলে মিসবা বেগমের নাবালক মেজো ছেলেকে আঘাত করে স্বামী তৌর আলি,আর তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে যান মিসবা বেগম। তাদের কথা কাটাকাটির মধ্যে কেন ছেলের গায়ে হাত দিলেন এই কথা তৌর আলিকে জিজ্ঞেস করতেই আবারও মিসবা বেগমের ওপর চড়াও হন স্বামী তৌর আলি। কিছুক্ষণ পর মিসবা বেগম ও তৌর আলির মধ্যে কথা কাটাকাটি বন্ধ হলে দুই নাবালক ছেলেকে রাতের খাবার খাইয়ে পাশের ঘরে ঘুম পাড়িয়ে দেন মিসবা বেগম। ১৯ তারিখ ভোর দুটো থেকে তাদের মধ্যে আবার শুরু হয় তর্কবিতর্ক। তর্কবিতর্ক একসময় এমন আকার ধারণ করে যে তৌর আলি ঘরে থাকা সব্জি কাটার দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তার স্ত্রীকে। হত্যার পর মিসবা বেগমের গলা থেকে রক্ত ঝরছে দেখে একটি বালিশ দিয়ে মুখ চাপা দিয়ে রেখে দেন। এবং ভোর হওয়ার আগেই অবস্থা বেগতিক দেখে ঘর থেকে পালিয়ে গিয়েছিলো তৌর আলী। দুই নাবালক সন্তান পাশের ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকায় রাতের ঘটনা তারা প্রত্যক্ষ করেনি। ভোর চারটে নাগাদ দুই নাবালক ছেলে নামাজ পড়া শেষে যখন দেখতে পায় পাশের ঘরের দরজা খোলা তখন তারা ঘরে ঢুকে এবং দেখতে পায় মা মিসবা বেগমের মুখের ওপর একটি বালিশ দিয়ে চাপা দেওয়া রয়েছে। বার বার মা মা বলে ডাকলেও মিসবা বেগম সাড়া না দিলে ধীরে ধীরে এগিয়ে গিয়ে মিসবা বেগমের মুখের ওপরের বালিশ সরাতেই দেখে মায়ের রক্তাক্ত দেহ।
রক্তাক্ত দেহ দেখে ভয়ে চিৎকার শুরু করে দুই নাবালক শিশু। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে দেখতে পান মিসবা বেগমের নিথর রক্তাক্ত দেহ। প্রতিবেশীদের তরফ থেকেই খবর দেওয়া হয় ইরানি থানায়। ১৯ মে রোববার সকাল আনুমানিক ৮টা নাগাদ ইরানি থানার ওসি যতীন্দ্র দাস,মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়ন্ত কর্মকার সহ একঝাক পুলিশ ও টি.এস.আর বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। শুরু হয় প্রাথমিক তদন্ত।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় তৌর আলি তার স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে বাড়ি থেকে পালিয়েছে। ১৯শে মে,বেলা প্রায় ১১টা থেকে শুরু হয় স্ত্রী হত্যার দায়ে অভিযুক্ত তৌর আলিকে খোঁজাখোঁজি। বহু খোঁজাখোঁজির পর গতকাল রাত অর্থাৎ ২০ মে সোমবার রাত প্রায় একটা নাগাদ একটি সুত্রের খবর অনুযায়ী পুলিশ তৌর আলির বাড়ির কাছাকাছি একটি বাড়ির জলাশয়ের সামনে ঘুরাঘুরি করছে বলে খবর পেলে পুলিশ তৌর আলিকে ধরতে ফাঁদ পাতে। এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে জালে তুলতে সক্ষম হয় ইরানি থানার পুলিশ। গোটা পুলিশি অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন মহকুমা পুলিশ আধিকারিক জয়ন্ত কর্মকার, ইরানি থানার ওসি যতীন্দ্র দাস সহ বেশ কিছু পুলিশ ও টি.এস.আর বাহিনী।
মিসবা বেগমের ভাই মোজাইদ হোসেন বার বার শ্বশুরবাড়ি থেকে অর্থ আনার অভিযোগ তৌর আলির বিরুদ্ধে করলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তৌর আলি জানায় ওর স্ত্রী মিসবা বেগমের পর পুরুষের সাথে সম্পর্ক ছিলো আর তার কারনেই সে তার স্ত্রী মিসবা বেগমকে হত্যা করেছে। এমনটাই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ইরানি থানার ওসি যতীন্দ্র দাস। মিসবা বেগমের মা রাবেয়া বেগম তৌর আলির বিরুদ্ধে ইরানি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন,যার মামলা নম্বর ৩৮/২০২৪, বর্তমানে তৌর আলির বিরুদ্ধে ৪৯৮(এ) ৩০২ ও ৩৪ আই.পি.সি ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে। তৌর আলিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে যে অস্ত্র দিয়ে মিসবা বেগমকে হত্যা করা হয়েছে সেটা উদ্ধারের চেষ্টা করবে পুলিশ। এবং তার পরই তাকে মংগলবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান ইরানি থানার ওসি যতীন্দ্র দাস। বহুদিন পর শহর উত্তরাঞ্চলে এই ধরনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে। তবে হত্যা কান্ডের মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইরানি থানার তৎপরতা অভিযুক্ত খুনি তৌর আলিকে গ্রেফতার করায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন শহরর উত্তরাঞ্চলের মানুষ।

For All Latest Updates

ভিডিও