Usha Bazaar Murder case
উষা বাজার গুলি কাণ্ডে প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী এবং সুস্মিতা সরকারকে তিন দিন পুলিশ রিমান্ড শেষে আবারও কোর্টে তোলা হয় শুক্রবার। পুলিশ প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরীকে ৬ দিনের এবং সুস্মিতা সরকারকে ৮ দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে। আদালত থেকে দুজনকেই ফের চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত,ভারত রত্ন সংঘের সম্পাদক দূর্গা প্রসন্ন দেব হত্যাকান্ডের ১০ দিন পরও পুলিশ হত্যার মূল কুশীলবদের গ্রেফতার করতে ব্যর্থ। তবে লোক লজ্জা থেকে বাঁচার জন্য রাজধানীর পুলিশ প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী, সুস্মিতা সরকার সহ তার মা উমা সরকার এবং বোন প্রতিমা সরকারকে গ্রেফতার করেছে। অপরদিকে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বীরচক্র ঘোষ, আগরতলা থেকে মূল অভিযুক্ত রাজু বর্মনের এক নিকট আত্মীয় সানি সাহা রায় এবং অপরদিকে ঝাড়খন্ড থেকে গ্রেপ্তার করা হয় আকাশ করকে। পুলিশের দাবি আকাশ করই গুলি চালিয়ে হত্যা করেছিল দুর্গা প্রসন্ন অর্থাৎ ভিকিকে দেবকে। অন্যদিকে তিন দিন আগে তদন্তকারী পুলিশ অভিযুক্ত প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী, সুস্মিতা সরকার, এবং বীর চক্র ঘোষকে আরো দশ দিনের রিমান্ডের দাবী জানিয়ে ছিলো আদালতে। কিন্তু মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের বিচারক সব কিছু বিচার বিবেচনা করে প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী ও সুস্মিতা সরকারের তিন দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপরদিকে বীরচক্র ঘোষকে সাত দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে থাকার নির্দেশ দেন।আদালতের শুক্রবার তিন দিন রিমান্ড শেষে পুলিশের তরফ থেকে প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী এবং সুস্মিতা সরকারকে আদালতে পেশ করা হলে তাদের দুজনকে চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছেন বিচারক। কিন্তু এই মামলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হচ্ছে, প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরী অর্থাৎ ভারতরত্ন ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতির সাথে এই হত্যা মামলার কোন সম্পর্ক নেই। অযথাই তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি নিতান্তই গোবেচারা মানুষ। নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে পুলিশ ষাটোর্ধ প্রদ্যুৎ ধর চৌধুরীকে গ্রেফতার করে নিজেদের চিত্রনাট্য অনুযায়ী এই মামলার ছক সাজাচ্ছে। একই কথা প্রযোজ্য সুস্মিতা সরকারের গ্রেপ্তারের বিষয়েও। কিন্তু এক কথা বলা যায় গোটা রাজ্যবাসীর সামনে জলের মতো পরিষ্কার, ভিকি খুন কাণ্ডে, বিমান দাস, রাজু বর্মন, রাকেশ বর্মন, দেবব্রত বর্মনরা জড়িত রয়েছে। তারা কোথায়? জানেন না অনুসন্ধানকারী পুলিশ।হাস্যকর! এয়ারপোর্ট থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল এই মামলা নিয়ে অতিশয় ব্যস্ত এবং এই ব্যক্তিটি হাবে ভাবে মামলার নিষ্পত্তি করে নিয়েছেন বোঝাতে চাইলেও প্রকৃতপক্ষে মানুষের চোখে তিনি ঠুলি পড়াতে চাইছেন বিষয়টি পরিষ্কার। আবার অন্যদিকে বলাবলি চলছে, খুনের এই ডামাডোলের মধ্যেই ওসি অভিজিৎ মন্ডল আবার রাজু – বিমানের টাকার নোটের গন্ধ পেয়ে গেছে।স্বাভাবিক ভাবেই ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের নাকে লাগছে না দূর্গা প্রসন্ন’র তাজা রক্তের গন্ধ, এমনটাই বলছেন, ঊষা বাজার অঞ্চলের লোকজন। অপরদিকে বিভিন্ন তথ্যের উপর বিশ্লেষণ করে জানা গেছে দূর্গা প্রসন্ন খুনের সঙ্গে অনেকটাই জড়িত রাজ্যের অপরাধ জগতের একসময়ের মাফিয়া অমিতাভ ঘোষ ওরফে অমিত। এই মুহূর্তে অমিত ঘোষ সমাজদ্রোহী রাজু বর্মনের উপদেষ্টা। রাজুর আতিথেয়তার অমিত থাকতেন ঊষা বাজারে। ঊষা বাজার অপরাধ জগতে গুঞ্জন, অমিত ঘোষের কলকাতাস্থিত বাগুইহাটি বাড়িতেই দূর্গা প্রসন্ন হত্যা কান্ডের মূল পরিকল্পনা ছকা হয়েছিল। অপরাধ জগতের দীর্ঘ দিনের পাকা খেলোয়াড় অমিত ঘোষের সাজানো প্লটেই ভিকির হত্যাকান্ডকে বাস্তবায়িত করেছে বিমান – রাজুরা। সূত্রটির দাবি, দূর্গা প্রসন্ন হত্যার পর পর রাজু বিমানরাও আস্তানা গেড়েছে অমিত ঘোষের কলকাতাস্থিত কোন এক গোপন ঠেকেই। কিন্তু তাদের সন্ধানে পুলিশের কোন খোঁজ খবর নেই। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে মাঠে নেমে পুলিশ বিভিন্ন দিকে ড্রিবল করে বেড়াচ্ছে। যার ফলে, অপরাধ বিশেষজ্ঞ মহলে
এয়ারপোর্ট থানার পুলিশের তদন্ত কি ঊষাবাজার অপরাধ জগতের কম্পাস অনুযায়ী ঘুরবে? নাকি মূল অপরাধীদের বাঁচানোর জন্য পুলিশ রচনা করবে আরোও এক নতুন স্ক্রিপ্ট? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে খোদ ঊষাবাজার অঞ্চলের জনমনে।