Shirdi Sai Baba Temple , Tripura
ত্রিপুরায় এই প্রথম কোনো স্থানে গড়ে উঠেছে সাঁই বাবার নিজস্ব মন্দির। এমনিতে সাঁই বাবার ভক্তেরা নিজেদের বাড়ি ঘরে কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে উনার ছবি কিংবা মূর্তি বসিয়ে নিত্য পূজার্চনা করেন । তবে এতকাল যাবত ত্রিপুরায় তেমন ভাবে কোনো মন্দির তৈরি করা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে রাজধানী আগরতলার আমতলী বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় এক বিশাল শিরডি সাঁই বাবার মন্দির গড়ে উঠেছে। যা পর্যটন তালিকায় বর্তমানে হাজার হাজার ভক্তের একটি অতি প্রিয় স্থান।
সাঁই বাবা ভারতীয় হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই পূজিত। উভয়েই উনাকে ফকির হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি একজন ভারতীয় ধর্ম গুরু, যোগী , সন্ত ফকির ছিলেন। হিন্দু ভক্তেরা উনাকে দত্তাত্রেয়ের অবতার মনে করতেন। আবারো কারো কারো মতে উনি একজন সুফি পির বা কুতুব। সাঁই শব্দটি সংস্কৃত শব্দ থেকে এসেছে। যার অর্থ “সাক্ষাৎ ঈশ্বর” বা “দিব্য”। বহিঃরাজ্যে সাঁই বাবার পুজোর রীতি প্রচলিত আছে। উনার শিক্ষার উপাদান হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায় থেকেই গৃহীত হয়েছিল। তাই উভয় ধর্মের মানুষ উনার আরাধনা করেন এবং বিশ্বাস ও করেন।
২০২১ সালে ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার আমতলী বাইপাসে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়। উল্লেখ্য এই মন্দির টি নিজস্ব ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হয়। মন্দিরে নিত্যদিন ৪ বার করে আরতি ও পূজার্চনা করা হয় সাঁই বাবার। এছাড়া প্রত্যেক বৃহস্পতি বার এবং রবিবার দুপুরে এবং সন্ধ্যায় দুবার আরতির পর বিশেষ প্রসাদ বিতরণ করা হয়ে থাকে।
মন্দির টি যে ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত সেই ট্রাস্ট তৈরি হয়েছিল ২০১১ সালে। এর পর থেকে এখানে জমি ক্রয় এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু হয়। যে স্থানে মন্দির টি তৈরি হয়েছে তার একটা অংশ মন্দিরের জন্যে দান করা হয়েছে। বাকিটা ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। পরবর্তী সময় জায়গাটিকে সমতল করে এখানে মন্দির গড়ে তোলার উপযোগী করে তোলা হয়। এর পর মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ থেকেই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তবে করোনার কারণে কাজ কিছুটা পিছিয়ে পড়ে। প্রায় ৫ বছর সময় লাগে মন্দির টি সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হতে।
মন্দিরের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা বার্মা থেকে এসেছিলেন। গোটা মন্দিরে যে ইটালিয়ান মার্বেল এর কাজ করা হয়েছে তা আনা হয়েছে হায়দ্রাবাদ থেকে। সব মিলিয়ে বহু সময় এবং পারিশ্রমিকের ফল আজকের এই সুসজ্জিত সুদৃশ্য মন্দির।
রোজ শত শত মানুষের ভিড় চোখে পড়ে মন্দিরে। বিশেষ করে বছরের যে বিশেষ সময়ে সাঁই বাবার উৎসব হয় তখন এই ভিড় উপচে পড়ে। দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমশই বাড়ছে এই মন্দিরে। বাইপাস সংলগ্ন হবার কারণে ও এখানে মানুষের নজর কাড়ে এই মন্দির।