Narendra Modi to be PM third time
বুথ ফেরত সমীক্ষাকে রীতিমতো ব্যঙ্গ করে ভোটের ফলাফল চমকে দিল দেশবাসীকে। এককভাবে নিরঙ্কুশ হলো না বিজেপি। শরিক দলগুলোর উপর এবার ভরসা রাখতে হবে মোদি সরকারকে। এক্ষেত্রে শরিক দল গুলোর উপর বিজেপি কতদিন নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবে সেটাই এখন প্রশ্ন।অবশেষে বহু প্রতীক্ষিত এবং বহু চর্চিত দেশের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল দেশবাসীর সামনে। আর এই ফলাফল গোটা দেশবাসীকে চমকে দিয়েছে। যাবতীয় বুথফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণিত করে প্রবলভাবে উঠে এসেছে বিজেপি ও মোদি বিরোধী ইন্ডি জোট। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট ম্যাজিক সংখ্যা থেকে এগিয়ে থাকলেও,এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না তৃতীয়বারের মতো বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে কিনা। একই সাথেও এটাও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না, তৃতীয়বারের জন্য নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে পারবেন কিনা? এই অনিশ্চয়তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এনডিএ’র জোট শরিকদের মতিগতি।নীতীশ, চন্দ্রবাবু নাইডু’র মতো নেতারা শেষপর্যন্ত জোটে থাকবেন কিনা?এটাই হচ্ছে এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন।যতটুকু খবর, ইতিমধ্যে কংগ্রেস থেকে নীতীশ কুমারকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করার টোপ দেওয়া হয়েছে।আর নীতীশ কুমারের যে ট্র্যাক রেকর্ড, তাতে নীতীশের উপর চোখ বুজে ভরসা করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, সেটা আর কেউ না হোকচ বিজেপি ভালো করেই জানে।তবে ফলাফলের যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তাতে শুধু নীতীশকে আনলে হবে না।তাঁর সাথে চন্দ্রবাবু নাইডু সহ আরও দুই-তিনটি ছোট দলকে ইন্ডি জোটে আনতে হবে।তবেই ইন্ডি জোটের পক্ষে সরকার গড়া হয়ত সম্ভব হতে পারে।কিন্তু কাজটা কঠিন।তবে রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই।এটা সকলকে মাথায় রাখতে হবে। ফলে দেশের জাতীয় রাজনীতিতে আগামী আরও কয়েকদিন নানা চমকপ্রদ ঘটনা,নানা রাজনৈতিক টানাপোড়েন লক্ষ্য করা যাবে এ নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। একই সাথে গোটা দেশবাসীর নজর থাকবে দিল্লীর দিকে।
তবে এই ফলাফল থেকে আপাতদৃষ্টিতে এনডিএ জোটের জয় হয়েছে দাবি করা হলেও, এই জয়কে কষ্টের জয় বললে খুব একটা ভুল হবে না।রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলকে বিজেপি ও মোদির নৈতিক পরাজয় হিসাবে দেখছেন। রাজ্যে রাজ্যেই বড় ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি।শুধু তাই নয়, মোদি ব্র্যান্ড,মোদি গ্যারান্টি, ডাবল ইঞ্জিন, সবেতেই লেগেছে জোর ধাক্কা।২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং মোদি ‘ইসবার চারশ পার’ এবং বিজেপি একাই ৩৭০ আসন পাওয়ার স্লোগান ও দাবি করে ভোটের ময়দানে নেমেছিল। চারশ পার তো দূরের কথা, তিনশ পর্যন্ত পার করতে পারেনি।আর একাই ৩৭০ আসন পাওয়ার দাবিও মুখ থুবড়ে পড়েছে।গত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যেখানে একাই ৩০৩ আসনে জয়ী হয়েছিল,মোদি গ্যারান্টিতে এবার বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পর্যন্ত অর্জন করতে পারেনি।২৪০ থেকে ২৫০০ এর মধ্যে বিজেপি থেমে গেছে।রাজনৈতিক পণ্ডিতদের মতে, এটা বিজেপি এবং মোদি উভয়ের নৈতিক পরাজয়।
এমন অপ্রত্যাশিত ফলাফল কেন?এ নিয়ে বিজেপি হয়তো পর্যালোচনা করবে।কিন্তু ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে একটা বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছে, বিকশিত ভারতের স্লোগান, মোদি গ্যারান্টি, মোদি ও যোগীর অপ্রতিরোধ্য ইমেজ, রামমন্দির প্রতিষ্ঠা ও রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা, এই সবে দেশবাসী খুব একটা সাড়া দেননি।বরং দেশবাসী ভোট দিয়েছেন দ্রব্যমূল্য, বেকারত্ব সহ আরও একাধিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যাকে সামনে রেখে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল বলে দাবি করা বিজেপি আমজনতার সেই মৌলিক সমস্যাগুলি ধরতেই পারেনি। ধরতে পারলেও তা এড়িয়ে গেছে।যার পরিনাম ফলাফলে স্পষ্ট। আর একেই হাতিয়ার করেই বাজিমাত করেছে কংগ্রেস ও ইন্ডি জোট।নতুবা উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান সহ আরও কয়েকটি রাজ্যে এমন ফলাফল হবে কেন? উত্তর এখনই হয়তো পাওয়া যাবে না। তবে সবথেকে বড় কথা হচ্ছে, নরেন্দ্র মোদি তৃতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন কিনা?সেই দিকেই এখন নজর থাকবে সকলের।