Deepraj Debbarma death update
মৃত্যু এক অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আকস্মিক সত্য। যাকে অবহেলা যেমন করা যায়না, তেমনি মেনে ও নেওয়া যায়না। আর যে পরিবারের তরতাজা একখানা যুবকের এমন হঠাৎ করেই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে সেই পরিবারের কি অবস্থা হতে পারে তা ভাবলে ও গাঁ শিউড়ে উঠে।
ত্রিপুরার ধলাই জেলার কমলপুর মহকুমার দ্বীপরাজ দেব্বরমার মৃত্যু ও ততটাই আকস্মিক এবং মর্মান্তিক ঘটনা। শুধু স্থানীয়দের জন্যেই নয়। বরং গোটা রাজ্যের মানুষ এই ঘটনায় স্তম্ভিত।
গত ১লা মে ত্রিপুরা কো-অপারেটিভ ব্যাংক এর নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসাম যাবার পথে হাফলং সড়কে ঘটে যাওয়া বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় দ্বীপরাজ। সঙ্গে আরও প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনা রাতের আঁধারে ঘটে। তবুও তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষনে দ্বীপরাজের জীবনের প্রদীপ নিভে গেছে। ঘটনা পরদিন ২রা মে প্রকাশ্যে আসতেই তাঁর পরিবারের মাথায় যেন বাজ ভেঙ্গে পরে। সেই সাথে কো – অপারেটিভ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের ভুল সিদ্ধান্তের জেরে দ্বীপরাজের বলি হয়েছে বলেও ক্ষোভ উগড়ে দেন সাধারণ মানুষ। তবে সব চাইতে বড় কথা তাঁর পরিবারের এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।
দ্বীপরাজ দীর্ঘদিন যাবত সরকারি চাকরীর জন্যে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। মাস চারেক আগেই বিয়ে ও করেছেন। তাঁর মৃত্যুর সংবাদে স্বাভাবিক ভাবেই সর্বহারা হয়ে গেল তাঁর সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী ও।
আজ শুক্রবার তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কমলপুর স্থিত তাঁর নিজ বাসভবনে। ছেলের মৃতদেহ দেখেই চিৎকার করে উঠেন বাবা, মা, বোন সহ এলাকাবাসীরা ও। এমনকি বাড়ির গৃহপালিত পৌষ্য প্রাণীটিও ভারাক্রান্ত হয়ে বসে থাকে দ্বীপরাজের কফিনের পাশে।
তাঁর মায়ের আর্তনাদ, স্ত্রীর যন্ত্রণায় ভরা কান্না সব কিছু যেন গোটা কমল্পুরের আকাশে বাতাসে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল আজ। এই ক্ষতির পূরণ কে দেবে? আদৌ কি এই ক্ষতির পূর্তি সম্ভব?
আজ এক সরকারি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দাম্ভিক সিদ্ধান্তের বলি হতে হল দ্বীপরাজের মতো একজন যুবক কে। আগামী দিনে কি এভাবেই মায়ের কোল শূন্য করে সরকারি চাকরীর স্বপ্ন নিয়েই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেবে আরও দ্বীপরাজ? নাহ, এমনটা যেন আর না হয়। আর কখনো যেন কোনো মায়ের কোন শূন্য না হয়ে যায় এভাবে, আর কোনো স্ত্রীর জীবনে যেন নেমে না আসে এমন অন্ধকার, সেই প্রতিশ্রুতি টুকুই অন্তত দিক এই সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো। তাতেও যদি কিছুটা স্বস্তি পায় দ্বীপরাজের আত্মা।