TET qualified students arrested

কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের সাথে দেখা করার সময় আছে , আমাদের কষ্ট বোঝার সময় নেই মুখ্যমন্ত্রীর

বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় বেকারত্ব এক নজির বিহীন সমস্যা। পূর্বতন সরকারের আমলে কি ছিল না ? ছিল অবশ্যই। কিন্তু তা বলে ঘন ঘন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়ে রাস্তায় বসে চাকরীর দাবীতে বারংবার ধর্না দেওয়ার মতো ঘটনা বিগত ২৫ বছরে কত বার ঘটেছে আমাদের জানা নেই।
ফেয়ার নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা বিজেপি সরকারের রাজত্বে ফেয়ার ভাবে পরীক্ষায় পাশ করেও চাকরি জুটছে না কপালে। কেন জানতে চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করার আর্জি খারিজ হচ্ছে বারবার। অতঃপর, ক্ষুব্ধ ক্লান্ত হতাশা গ্রস্থ শিক্ষার্থী মহল এবার এক গুরুতর অভিযোগের তীরে বিদ্ধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী কে। আর সেই উক্তি রীতিমতো প্রশ্ন জাগিয়ে তুলেছে এবার শিক্ষানুরাগী মহল থেকে শুরু করে বুদ্ধি জীবীদের মধ্যেও।
রাজ্যে নিত্য দিন কোনো না কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যায় মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী কে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, যে কোনো ইভেন্টে পৌঁছে যান তিনি। হ্যাঁ অবশ্যই কর্ম ব্যস্ততা রয়েছে উনার। কিন্তু এই ব্যস্ততার মাঝেও কোমর হেলিয়ে দুলিয়ে, অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে লাখ খানেক ফোলোয়ার কুড়নো ত্রিপুরার “কন্টেন্ট ক্রিয়েটর” দের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারেন অথচ দিন রাত পরাশুনা করে যারা টেট এর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় বসলো, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হল অথচ চাকরি পেল না তাদের কথা শোনার সময় নেই উনার ? কেন ?
মুখ্যমন্ত্রী নিজেও একজন সুশিক্ষিত ব্যক্তি। শিক্ষার মর্ম উনি বেশ ভালো ভাবেই অনুধাবন করেন। কিন্তু তার পরেও উনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলাবার পর থেকে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর ও শিক্ষা ব্যাবস্থায় কোনো বদল কিংবা জরুরী পদক্ষেপ নেননি বলেই অভিযোগ এবার টেট উত্তীর্ণ বেকার যুবক যুবতীদের।
বিগত ২০২২ সালের টেট পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীরা আজ মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহার নিজ বাসভবনের সামনের মূল সড়ক পথে বসে বিক্ষোভ ও ধর্না দেন। বিক্ষোভ এতটাই জোরালো ছিল যে পুলিশ প্রশাসন ও সামরিক বাহিনী কে আসতে হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে। অবশেষে তাদের কে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়। যা কিনা এ রাজ্যে আরও এক নজির বিহীন ঘটনা। শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কিছু বললেই গ্রেফতার। এমনকি শিক্ষার্থী দের ও রেহাই দেওয়া হয়না। এর আগে ১০৩২৩ চাকুরী চ্যুত শিক্ষকদের সাথে এই সরকার কি আচরণ টাই না করেছে তার সাক্ষী আছে গোটা রাজ্য। এছাড়া ও বিজেপি সরকারের খামতি গুলো ধরিয়ে দিতে গিয়ে বিরোধী বাম , কংগ্রেস সর্ব দলীয় দের কেই কখনো না কখনো গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি । তাদের অপরাধ কোথায় ? তারা শিক্ষিত এবং চাকরীর দাবী জানিয়ে আন্দোলন করছেন বলে ? নাকি তারা লেখা পড়া করে মাথা উঁচু করে বাচতে চান, শিক্ষিত যুবক যুবতীরা সমাজের ভালো মন্দের বহর বুঝতে সক্ষম , যা এই রাষ্ট্র বাদী দলের পক্ষে খুব একটা শুভ নয় তাই তাদের সাথে এই ব্যবহার ?
এ রাজ্যে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হলে আপনাকে স্বাদরে আমন্ত্রণ জানিয়ে বরণ করা হবে মঞ্চে, আর শিক্ষিত হয়ে চাকরীর দাবী, হকের দাবী জানালেই আপনার ভাগ্যে জুটবে গ্রেফতারী অথবা বঞ্চনা।
এই অবস্থা ত্রিপুরার বর্তমান শাসক শিবিরের ভবিষ্যৎ এর জন্যে খুব একটা শুভ ইঙ্গিত নয় বলেই মনে করছেন সুশিক্ষিত , বিজ্ঞ মহল।

Leave A Reply